লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জলিল সর্দার (৪২) নামে এক ব্যক্তিক্তে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় হারুনুর রশিদ বেপারী (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের রায় প্রদান করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত হারুন রায়পুর উপজেলা চরবংশী গ্রামের হযরত বেপারীর ছেলে। ভিকটিম জলিল সর্দার উদমারা গ্রামের সিরাজ সর্দারের ছেলে। তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মেস্তুরী ছিলেন।
এ মামলায় অভিযুক্ত আরও ৪ আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, রায়পুর উপজেলার চর আববিল ইউনিয়নের মৃত মিন্নত আলীর ছেলে আবুল কালাম ওরফে কালু বেপারী (৪২), উদমারা গ্রামের মৃত শাহজাহানের ছেলে মো. জাহিদ ওরফে আবুল কাশেম (৩৪), চর আবাবিল গ্রামের তোফায়েল পলোয়ান (৩১), একই এলাকার জামালের ছেলে আকতার হোসেন ওরফে গাঁজা আকতার (৩৬)।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁশুলী (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আসামী হারুনুর রশিদ ভিকটিক জলিল সর্দারের গলায় চেইন পেচিয়ে তাকে হত্যা করে। আদালতে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তাকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রদান করে আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি রাতে হারুনুর রশিদ মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে জলিল সর্দারকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে সে আর বাড়ি ফিরে যায় নি। পরদিন সকালে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বান্দের পাড় ধানক্ষেতে জলিল সর্দারের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
ওইদিন জলিল সর্দারের পিতা সিরাজ সর্দার (৬৭) বাদি হয়ে রায়পুর থানায় অজ্ঞাতদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি লক্ষ্মীপুর জেলা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. আবু জাহের সরকার তদন্ত করেন। এতে হারুনুর রশিদকে প্রধান করে আবুল কালাম ওরফে কালু বেপারী, মো. জাহিদ ওরফে আবুল কাশেম, তোফায়েল পলোয়ান ও আকতার হোসেন ওরফে গাঁজা আকতারকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ভিকটিম এবং অভিযুক্তরা একত্রে আড্ডা দিতো এবং গাঁজা সেবন করতো। ভিকটিম জলিল সর্দারের ২য় স্ত্রী পারুল বেগমের মোবাইল ফোন চুরিকে কেন্দ্র করে আসামীদের সাথে জলিলের বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধকে কেন্দ্র করে হারুনুর রশিদ মোবাইল ফোনে জলিলকে ডেকে নিয়ে অন্য আসামীদের সহযোগিতায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
আদালতের পিপি জসিম উদ্দিন জানান, আদালত স্বাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে একজনের যাবজ্জীবন ও চারজনকে খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত হারুনসহ আরও তিনজন আদালতে উপস্থিত ছিলো। আদালত হারুনকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
Leave a Reply