News Headline :
লক্ষ্মীপুর-২ আসন‘ঈগলের এজেন্ট হলে ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি নৌকার কর্মীদের’ লক্ষ্মীপুর-২ নির্বাচনী কাজে সরকারি ‘স্বপ্নযাত্রা’ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করায় ইউপি চেয়ারম্যানের জরিমানা   লক্ষ্মীপুর-৩ আসন ঋণ খেলাপির অভিযোগে সজিব গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসেমের মনোনয়ন বাতিল লক্ষ্মীপুর-৪ আসনেও বিকল্পধারার মান্নানের মনোনয়নপএ বাতিল রামগঞ্জের চন্ডিপুর মনসা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচন স্থগিত করলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লক্ষ্মীপুর-১ আসন  স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী পবনকে হত্যার হুমকি পৌর কাউন্সিলরের  চন্ডিপুর মনসা উচ্চ বিদ্যালয় পক্ষপাতমূলক আচরনের অভিযোগ ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ, উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ রামগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে অস্ত্রসহ আটক ২ রামগঞ্জে নৌকার প্রার্থী সহ মনোনয়ন ফরম জমা দিলেন ০৮ জন
মোমিনুর রহমান মামুনকে সরিয়ে আনিসুলকে নতুন কারা মহাপরিদর্শক নিয়োগ

মোমিনুর রহমান মামুনকে সরিয়ে আনিসুলকে নতুন কারা মহাপরিদর্শক নিয়োগ

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হককে নতুন কারা মহাপরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ডিন হিসেবে কর্মরত। ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার আনিসুল হককে নিয়োগ দিয়ে তার চাকরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে ন্যস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আর বর্তমান কারা মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুনকে সেনাবাহিনীতে ফিরিয়ে নিতে তার চাকরি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ন্যস্ত করা হয়েছে।

বেশকিছু দিন ধরে কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজি, প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে?

গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর আইজি (প্রিজন্স) হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে থাকে। কারা সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ডিআইজি (প্রিজন্স) টিপু সুলতানের সহযোগিতায় তিনি দুর্নীতি মামলার আসামি সাময়িক বরখাস্ত আসামি ডিআইজি (প্রিজন্স) বজলুর রশীদকে পদায়নের সুপারিশ করেন। বরিশাল বিভাগে বজলুরকে পদায়নের জন্য তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের কাছে একাধিকবার প্রস্তাব পাঠান। এ প্রস্তাব গ্রহণ না করে বরং বিষয়টি নিয়ে তার কাছে মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা তলব করে।

বর্তমান কারা মহাপরিদর্শক মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- যোগদানের পর থেকেই তিনি আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। বিএনপি- জামায়াত সমর্থিত কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিত ব্রিগেডিয়ার মামুন একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের কাছে ডিআইজি তৌহিদুল ইসলাম, সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুভাষ কুমার ঘোষ, জেল সুপার নেসার আলম, জেলার মাহবুবুল ইসলাম এবং ডেপুটি জেলার মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন।

অভিযোগে বলা হয়- এসব কর্মকর্তার কারণে তিনি কারা অধিদপ্তরে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারছেন না। দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেন। পাশাপাশি দুদকে পালটা অভিযোগ দেয়া হয়। এতে বলা হয়, একই মতাদর্শে বিশ্বাসী আইজি (প্রিজন্স) মামুন ও ডিআইজি (প্রিজন্স) টিপু সুলতান বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুনের অনিয়ম-দুর্নীতি অতীতের যে কোনো রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। কারাগারে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি বন্দিদের তিনি বিশেষ সুবিধা দেন?রফিকুল আমিনসহ ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে বসেই জুম মিটিং করার সুযোগ পান। তার দুর্নীতির কারণেই কাশিমপুর কারাগারে বসে জঙ্গি সদস্য আল আমিন মোবাইল ফোনে পলাতক আসামি আনোয়ার আলী হৃদয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের সুযোগ পান। গত বছরের ১৮ নভেম্বর মামুন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-১ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কারাবন্দি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তখন সাঈদী বলেন, ‘মামুন তুমি কেমন আছ। তুমি আইজি হয়েছ শুনে খুব খুশি হয়েছি।’

সূত্র জানায়, কারা অভ্যন্তরে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বড় ক্ষেত্র হলো কারা ক্যান্টিন। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ মূল্যে বন্দিদের কাছে খাবার বিক্রি করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এছাড়া কারাগারে বন্দি বেচাকেনা, সাক্ষাৎ বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য, খাবার বাণিজ্য, চিকিৎসা বাণিজ্য, পিসি বাণিজ্য, পদায়ন বাণিজ্য, কারা অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ মালামাল প্রবেশ বাণিজ্য এবং জামিন বাণিজ্যের নামে প্রভাবশালী চক্র বিপুল অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্য করে আসছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের তদন্তেও বিষয়টি উঠে এসেছে। কুষ্টিয়া জেলা কারাগার নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিটি দুর্নীতির ভয়াবহ সব তথ্য পেয়েছে।

বিভিন্ন কারাগার পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়- শুধু কুষ্টিয়া কারাগার নয়, সারা দেশের কারাগারে একই চিত্র বিরাজ করছে। দুর্নীতির ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসার কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে কারা অধিদপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা আহ্বান করার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও কারা অধিদপ্তর সভাটির আয়োজন করেনি। এমনকি ১৯টি সুপারিশের অধিকাংশই বাস্তবায়ন করা হয়নি। সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় থেকে কয়েক দফা তাগিদপত্র দিয়েও কাজ হয়নি।

এ বিষয়ে ২৮ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়া ‘কারা কর্মকর্তাদের লাগামহীন দুর্নীতি: তদন্ত শেষ হয় না, শাস্তিও নেই’ শীর্ষক আরেকটি প্রতিবেদন ২৭ জুন ঐ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, কারাসংশ্লিষ্ট ২৮৮ জনের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সবই প্রায় ফাইলবন্দি। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে শুধু তদন্তই হচ্ছে। বেশির ভাগ তদন্ত যেন শেষই হচ্ছে না। তাই অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিবেদন দুটির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবগত। ইতোমধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এর প্রতিফলন দেখা যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd