লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা মৎস্য অফিস, জলদস্যু, নৌ-পুলিশ ও উপকূল রক্ষীর হাতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হওয়ায় ১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে কমলনগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবনিমিয় সভায় তারা এ সব কথা বলেন। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (কোডেক) জেলেদের অধিকার আদায়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
কমলনগর প্রেসক্লাব সভাপতি এম এ মজিদের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোডেক’র প্রকল্প সমন্বয়কারী মোর্শেদা বেগম, মনিটরিং অফিসার দেব দুলাল হাওলাদার, ফিল্ড অফিসার মোকাম্মেল হোসেন, জেলে প্রতিনিধি আব্দুল মতলব মাঝি, আবুল কালামসহ প্রেসক্লাব’র সাধারন সম্পাদক ইউছুফ আলী মিঠু, প্রধান উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মানিক, বেলাল হোসেন জুয়েল, সিনিয়র সহ সভাপতি কাজী মুহাম্মদ ইউনুছসহ স্হানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
এ সময় মেঘনা উপকূলের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে জেলেরা জানান, একজন জেলে হওয়ার পূর্ব শর্ত তার জেলে কার্ড। এ জেলে কার্ড তৈরীতে শুরুতেই বিড়ম্বনার শিকার হন তারা। প্রকৃত জেলে হলেও মৎস্য কর্মকর্তার নির্ধারিত কিছু দালালের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জেলে কার্ড তৈরি করতে হয়। এরপর মেঘনায় বা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েও পড়েন বিভিন্ন সমস্যায়। তারা বলেন, প্রতিনিয়ত জলদস্যুদের কবলে পড়তে হয় তাদের। নদীতে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড জেলেদের নিরাপত্তার জন্য নিযুক্ত থাকলেও উল্টো তাদের হাতে আরো বেশি লাঞ্ছনার স্বীকার হতে হচ্ছে জেলেদের। আবার নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড কারেন্ট জালের অভিযানের নামে তাদের থেকে বিকাশের মাধ্যমে জেলে স্বজনদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। এক শ্রেণির দালাল আছে; ওই দালালরা ডাকাত, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের পক্ষে জেলেদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা না দিলে চলে অমানষিক নির্যাতন। আবার কোন কোন সময় তাদের মেরে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
মা ইলিশ রক্ষা ও ঝাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহে সরকারের নিষেধাজ্ঞা সময় জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তার নামে যে চাল দেয়া হয় এ প্রসঙ্গে জেলে প্রতিনিধিরা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যে অপ্রতুল সহায়তা দেয়া হয় তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাদের দাবি, এ খাদ্য সহায়তা না দিয়ে জেলেদেও মৎস্য ঋণের ব্যবস্থা করলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে আরেকটু ভাল ভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। মেঘনা বা গভীর সমুদ্রে ইলিশ উৎপাদনে সরকার যে পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে, সে মোতাবেক জেলেদের তেমন কোন সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে না। তাই তাদের দাবি, পরিবার পরিজনের কথা চিন্তা করে সরকার যেন তাদেরকে মৎস্য ঋণের ব্যবস্থা সহ প্রকৃত জেলে বাছাই করে সকল জেলেকে ‘জেলে কার্ড” প্রদানসহ নানাবিধ স্টেকহোল্ডারের হয়রানি থেকে পরিত্রাণ দেন।
Leave a Reply