লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে একটি এতিমখানার খাবারঘরসহ আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার ভোররাতে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের আলহাজ্ব মাওলানা আহম্মদ উল্লাহ ছাহেব মাদ্রসা কমপ্লেক্স ও এতিমখানা ঘটনাটি ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে জানিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়া জানায়, ভোররাত ৩টা ৪৫ মিনিটে প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ফজরের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠে। এসময় খাবার ঘরে করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। পরে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মনির হোসেন চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ ঘটনাসস্থলে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পূর্বেই রান্নাঘরে থাকা চাল-তরকারি, গ্যাস সিলিন্ডার, ফ্রিজ ও আসবাবপত্রসহ খাবার ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মনির হোসেন দাবি করেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠানের পাশ্ববর্তী সাইফ উদ্দিন, আবদুল মালেকদের সঙ্গে এতিমখানা ও মাদ্রাসার জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে মনিরের ওপর একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে আদালতে দুটি মামলা করেছেন। এরমধ্যে একটি মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালীকে তদন্ত দিয়েছে আদালত।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফ উদ্দিন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। মাদ্রাসার অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমরা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা পাওনা আছি। ওই টাকা চাওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে মিথ্যা অভিযোগ আনছে মনির হোসেন। তিনি দাবি করেন, মনির হোসেন এতিমখানা ও মাদ্রাসার কিছুই নয়, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আহম্মদ উল্যা। মনির প্রতিষ্ঠানকে নিজের জিম্মায় রাখার জন্য বিভিন্ন সময় নানানরকম নাটক সাজান। আগুনের ঘটনাটিও তার একটি সাজানো নাটক।
চন্দ্রগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিস্তারিত ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. ওয়াসি আজাদ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত হতে পারে এবং এতে দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে বলে জানান তিনি।